শিক্ষক দুর্নীতিকাণ্ডে রাজ্যজুড়ে ইডির তল্লাশির মধ্যে অপেক্ষায় দিন গুনছে পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর। স্থানীদের দাবি, বেকারদের চাকরি দেওয়ার নাম করে এলাকা থেকে কোটি কোটি টাকা তুলেছিলেন নিহত তৃণমূল নেতা নান্টু প্রধান। এমনকী সেই টাকায় এলাকায় একটি বিএড কলেজও বানান তিনি। রাস্তা দিয়ে এখন নীলবাতি লাগানো গাড়ি যেতে দেখলেই উঁকি মারছেন স্থানীয়রা। এই বুঝি এল ইডি।
ভগবানপুরের তৃণমূল নেতা নান্টুর সঙ্গে পার্থর দহরম মহরম গোপন কিছু নয়। পার্থর বাড়িতে অনুষ্ঠানে গাড়ি ভরে মাছ পাঠিয়েছিলেন নান্টু। এলাকায় সবাই জানত শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর যোগাযোগের কথা। তাই চাকরির জন্য টাকা তুলতে বেশি পরিশ্রম করতে হয়নি তাদের। ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গণপ্রহারে মৃত্যু হয় নান্টুর। তার পর বিএড কলেজে নান্টুর ঘর থেকে উদ্ধার হয়েছিল কোটি কোটি টাকা।
‘আমরা কাউকে আটকাইনি’, পশ্চিমবঙ্গ CID-র ‘অভিযোগের’ জবাব দিল দিল্লি পুলিশ
নান্টুর বাবা চাঁদহরি প্রধান অবশ্য ছেলের কীর্তির কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। চাকরিপ্রার্থীদের টাকা ফেরত দিচ্ছেন তিনি। এখনো পর্যন্ত ১৫ কোটি টাকা তিনি ফেরত দিয়েছেন বলে দাবি চাঁদহরিবাবুর।
সম্প্রতি এলাকায় গুঞ্জন শুরু হয়েছে, নান্টুর বাড়ি ও বিএড কলেজে হানা দেবে ইডি। আর তাই রাস্তা দিয়ে নীলবাতি লাগানো গাড়ি গেলেই উঁকি ঝুঁকি দিচ্ছে কৌতুহলি জনতা। দিন কয়েক আগে সরকারি কাজ পরিদর্শনে ওই রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন স্থানীয় বিডিও। তাঁর গাড়িকে ইডির গাড়ি ভেবে ভুল করে নান্টুর বিএড কলেজের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে থাকে স্থানীয় জনতা। স্লোগান ওঠে ‘চোর ধরো, জেল ভরো’
স্থানীয়দের দাবি, নান্টুর এই কারবারে যুক্ত ছিল তৃণমূলের বেশ কয়েকজন নেতা। তারাও নান্টুর কালো কামাইয়ের ভাগ পেয়েছে। নান্টুর মৃত্যুর পর চুপ মেরে গিয়েছে তারা। ইডির কাছে স্থানীয়দের দাবি, এই তৃণমূল নেতাগের খুঁজে বার করে ব্যবস্থা নিক তারা।
হলদিয়া শিল্পাঞ্চলে বড় পরাজয় ঘটল বিজেপির, শ্রমিকদের ভোটে তৃণমূলের জয়জয়কার
ওদিকে নান্টুর বিএড কলেজের পড়ুয়ারা আতঙ্কে ভুগছেন। কালো টাকায় তৈরি কলেজ তদন্তের জেরে বন্ধ না হয়ে যায়। চলতি বছর সেখানে ভালো সংখ্যায় ছাত্রছাত্রী ভর্তি হয়েছে। তবে কলেজ কর্তৃপক্ষের দাবি, কলেজ চালায় ট্রাস্ট। তার সঙ্গে নান্টুর কুকীর্তির কোনও সম্পর্ক নেই।
ছেলের মৃত্যু হলেও তার কাণ্ডকারখানায় বিব্রত বৃদ্ধ চাঁদহরিবাবু। তিনি বলেন, ‘পার্থ চট্টোপাধ্যায় তো বটেই, তৃণমূলের বহু নেতার সঙ্গে নান্টুর বেশ ঘনিষ্ঠতা ছিল।’ সব মিলিয়ে ইডির তদন্ত ঘিরে সরগরম ভগবানপুর।