প্রায় ৫,৬০০ জন চাকরিপ্রার্থীর হাতে নিয়োগপত্র তুলে দিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার বিকাশ ভবনে ব্রাত্য বসুর সঙ্গে বৈঠকের পরে এমনই জানালেন এসএলএসটি (নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি) প্রার্থীরা। তাঁদের দাবি, সোমবারের বৈঠক সদর্থক হয়েছে। চাকরিপ্রার্থীদের যাতে বেশিদিন আর রাস্তায় বসে থাকতে না হয়, সেই আশ্বাস দিয়েছে রাজ্য সরকার। আগামী ২২ ডিসেম্বর একদফায় ফের বৈঠক হবে। সেখানেই পুরো বিষয়টি আরও স্পষ্ট হবে বলে জানিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা। অন্যদিকে, রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু দাবি করেছেন যে চাকরি দিতে বদ্ধপরিকর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। আদালতের নির্দেশ মতো যাবতীয় পদক্ষেপ করা হবে।
রাজ্য ও আন্দোলনকারীদের বৈঠকের আপডেট
— শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের পরে চাকরিপ্রার্থীরা বললেন, 'সদর্থক আলোচনা হয়েছে। সরকারের তরফে ইতিবাচক পদক্ষেপের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে আলোচনা হোক। আন্দোলন চলবে।'
— পূর্ব মেদিনীপুরের এক চাকরিপ্রার্থী (যিনি আন্দোলনের ১,০০০ তম দিনে চুল কামিয়ে ফেলেন) বলেন, ‘কোথায় জট, সেটা আমরা জানতে পেরেছি। আমরা সেই বিষয়টা তুলে ধরেছি। আমাদের হাতে দ্রুত নিয়োগপত্র তুলে নিয়ে বাড়ি ফেরানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। ২২ ডিসেম্বর আমরা স্পষ্টভাবে জানতে পারব যে কবে আমাদের নিয়োগ করা হবে।’
— বৈঠকের পরে ব্রাত্য বসু বলেন, ‘আইনি জটিলতা দূর করার জন্য আমরা সদর্থক উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। আমি আগেও বলেছি যে আদালত যেরকম নির্দেশ দেবে, সেটা মেনেই আমরা চাকরি দেব। আমরা আশা করছি যে এই আইনি জট দ্রুত কেটে যাবে। আমি আগেও বলেছি যে চাকরি দিতে পারলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই দিতে পারবেন।’
আরও পড়ুন: ‘শিক্ষক শূন্যপদ আমরা পূরণ করব’, কার্শিয়াংয়ের সভা থেকে ঘোষণা মমতার
— তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘আইনি জট যাতে কেটে যায়, সেজন্য রাজ্য সরকার এবং স্কুল সার্ভিস কমিশন যাবতীয় চেষ্টা করবে। কোথাও না কোথাও ভুল তো হয়েছে। সেজন্যই এই জটিলতা তৈরি হয়েছিল। তবে সেটা ধীরে-ধীরে কেটে যাবে।’
— আগামী ২২ ডিসেম্বর ফের আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারের বৈঠক হবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ। যিনি সোমবারের বৈঠকে অবশ্য তৃণমূল নেতা হিসেবে হাজির ছিলেন না বলে দাবি করেছেন। তাঁর দাবি, চাকরিপ্রার্থীদের হয়ে তিনি বৈঠকে যোগ দেন। তাঁদের বৈঠকেই যোগ দেন বলে জানিয়েছেন কুণাল।
আরও পড়ুন: Teaching Vacancies issues:বাংলা সহ দেশে শিক্ষকদের শূন্যপদ কত, জানিয়ে দিল কেন্দ্র
— চাকরির দাবিতে ১,০০০ দিনের বেশি ধর্মতলার মেয়ো রোডে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এসএলএসটি (নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি) প্রার্থীরা। গত শনিবার ১,০০০ তম দিনে এক মহিলা চাকরিপ্রার্থী মাথার চুল কামিয়ে ফেলেন। তার জেরে চূড়ান্ত অস্বস্তিতে পড়ে যায় রাজ্য সরকার। মাথার চুল কামিয়ে ফেলার সময় ওই মহিলার কান্নায় মমতা সরকারের উপর প্রবল চাপ তৈরি হয়। যে সরকারের বিরুদ্ধে শিক্ষাক্ষেত্রে লাগামছাড়া দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তারপর আজ বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে বৈঠকে বসেন চাকরিপ্রার্থীরা।