এই মুহূর্তে বাংলা টেলিভিশনের অন্যতম চর্চিত মেগা সিরিয়াল ‘কার কাছে কই মনের কথা’। ফুলঝুরি হিসাবে দর্শকদের মন কেড়েছিলেন মানালি, শিমুল হিসাবেও ইতিমধ্যেই মন ছুঁয়েছেন তিনি। পাঁচ নারীর বন্ধুত্বকে ছাপিয়ে শাশুড়ি-বউমার দ্বৈরতই এতদিন ছিল এই সিরিয়ালের ইউএসপি। হালফিলে অবশ্য খানিক সহজ হয়েছে সেই সম্পর্ক। পাশাপাশি স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের তিক্ততা, বৈবাহিক ধর্ষণের মতো সংবেদনশীল বিষয়ও এই সিরিয়ালে উঠে আসছে।
শিমুলের প্রতিবাদী ও সাহসী চরিত্র পছন্দ করছে দর্শক। অন্যায় চুপ করে সহ্য করে না সে। এই প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মানালি বলেন, ‘আমি নিজেও মনের মধ্যে কোনও কথা চেপে রাখি না। যেটা সঠিক মনে হয় সেটাই বলি। শিমুলও তাই, ও অন্যায়ের প্রতিবাদ করে নিজের মতো করে। প্রতিবাদ করা মানে কিন্তু সংসার ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া নয়। সংসারটা ধরে রেখে নিজের জায়গাটা ধরে রেখে কীভাবে লড়াই করতে হয়, সেটা আমরা শিমুলের থেকে শিখতে পারি’।
শিমুল আমাদের আশেপাশে রয়েছে, বিশ্বাস করেন মানালি। টলিফোকাস কলকাতাকে অভিনেত্রী বলেন, ‘ভাঙাটা তো এক চুটকিতে যায়, কিন্তু গড়ে ধরে রাখাটাই আসল। কিন্তু জীবন একটাই, যে-যে ভাবে ভালো থাকবে, সেইভাবে ভালো থাকো’। সোশ্যাল মিডিয়া ট্রোলিং নিয়ে সরব হন মানালি। আমার মাথায় ঢোকে না, আমরা ডিপ্রেশনের কথা বলি, বন্ধুত্বের হাত বাড়ানোর কথা বলি। দিনের শেষে সব ভুলে যাই। মানবতার কথাটুকু মাথায় রাখি না।'
সপ্তকের সঙ্গে বিয়ে ভাঙা নিয়ে আজও সোশ্যাল মিডিয়া বিদ্রুপের শিকার হন তিনি। নিজেই জানালেন অভিনেত্রী। তাঁর কথায়, ট্রোলারদের জবাব দিতে তাঁর রুচিতে বাঁধে। মানালির কথায়, ‘আমি হয়ত একটা ব্যক্তিগত (জীবন নিয়ে) পোস্ট করলাম। সেটার নীচে একজন লিখল- বাবা! আপনি ভালো আছেন, আগেও তো একটা কাটিয়ে এসেছেন। সেই জায়গায় আমার মনে হয়, আপনি আমার জায়গায় ছিলেন না। আমি কী কাটিয়ে এসেছি আপনি জানেন না। আমি কবে কেঁদেছি, কবে ভালো থেকেছি সেটা কেউ জানে না আমার পরিবার ছাড়া। আমি যখন খারাপ থেকেছি, তখন আপনারা আমার পাশে ছিলেন না। খারাপ থাকাটা কেউ দেখতে পায় না, তাই মন্তব্য করাটা খুব সহজ।’
মানালি আরও বলেন, ‘আমি আমার বাবা-মা’র একমাত্র সন্তান। এই মুহূর্তে আমার মা নেই, তাই আমার বাবা-কে ভালো রাখাটা আমার দায়িত্ব। সেই জায়গা থেকে আমি যদি ভালো থাকি… আর সত্যি বলতে প্রত্যেক মানুষের ভালো থাকার অধিকার রয়েছে। তাই কখনও কাউকে ছোট করবেন না। আমরা তো মধ্যবিত্ত মানসিকতা নিয়েই বড় হয়েছি। আমরা ভাঙতে নয়, গড়তেই শিখেছি। কিন্তু দুটো ভালো মানুষও সবসময় এক থাকতে পারবে সেটা হয় না। কিন্তু সেটা নিয়ে বাইরে থেকে তাঁদের কেন মানুষ জাজ করে সেটা আমি আজও বুঝতে পারি না'।
প্রসঙ্গত, সঙ্গীত শিল্পী সপ্তকের সঙ্গে ২০১২-র ২৯ নভেম্বর সাতপাকে বাঁধা পড়েছিলেন মানালি দে। ভালোবেসেই বিয়ে করেছিলেন তাঁরা। কিন্তু ২০১৬-তে তাঁদের আইনি বিচ্ছেদ হয়। ২০২০ সালের ১৫ই অগস্ট পরিচালক অভিমন্যু মুখোপাধ্যায়কে বিয়ে করেন মালানি। সদ্যই তৃতীয় বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করেছেন দুজনে। মানালির মতোই অভিমন্যুরও এটা দ্বিতীয় বিয়ে, এর আগে অভিনেত্রী অনিন্দিতা বসুকে বিয়ে করেছিলেন অভিমন্যু।