মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের ঘোষাল বাড়িতে ঠাকুর দালানের সঙ্গে বাঁধা থাকে প্রতিমা। গত ৫০০ বছর ধরে এই প্রথা চলে আসছে। কিন্তু কেন এমন উদ্ভট নিয়ম পালন করা হয়ে থাকে এই বাড়িতে? অতীতে এমন কী ঘটেছিল, ইতিহাস কী বলছে দেখে নিন।
গয়ামুনি বৈষ্ণবীর হাত ধরে এই পুজোর সূচনা ঘটেছিল আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছর আগে। গয়ামুনি বৈষ্ণবীর নিজের কোনও সন্তান ছিল না। তিনি দত্তক নিয়েছিলেন এক কন্যাকে, নাম সত্যব্রতী দেব্যা। তারপর থেকেই এই বাড়ির পুজো গোঁসাই বা ঘোষাল বাড়ির পুজো বলে পরিচিতি লাভ করে।
এই বাড়িতে মনে করা হয় পুজোর সময় দেবী জীবন্ত হয়ে ওঠে, এবং ক্রমেই সামনের দিকে এগোতে থাকে। তাই যাতে দেবী বাড়ি ছেড়ে না চলে যেতে পারেন তাই তাঁকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়।
এই বাড়িতে কাঠামো পুজো করে প্রথম মাটি দেওয়া হয় রথের দিন। আর মোটামুটি সেদিন থেকেই এই বাড়িতে উৎসব শুরু হতে যায়! মহালয়ার দিনেই। দেবীর বোধনের যে ঘট থাকে সেটাকে স্থাপন করা হয়। সপ্তমীর দিন পালকিতে চড়িয়ে নবপত্রিকা নিয়ে আসা হয় ভাগরথি নদীতে। তারপর বৈদিক মতে এই নবপত্রিকাকে স্নান করানো হয়।
লুচি থেকে মিষ্টি, ফল থেকে সবজি সহকারে সমস্ত কিছু মিশিয়ে দেবীকে ভোগ দেওয়া হয়ে থাকে পুজোর চারদিন। খিচুড়ি, পোলাও, ইত্যাদি দেওয়া হয়ে থাকে সন্ধিপুজোর সময়।
দেবীর হাতে থাকে পিতলের অস্ত্র। এই বাড়ির পুজো দেখার জন্য দূরদূরান্ত থেকে মানুষ ভিড় করে। দেবীকে দেওয়া হয় বনকাপসি ডাকের সাজ। আজও ঐতিহ্য এবং ইতিহাসের মিশেলে পুজো করা হয় থাকে।