অনেকেরই কোভিড সংক্রমণ হচ্ছে। কিন্তু সকলে সমান ভাবে অসুস্থ হচ্ছেন না। কারও কারও ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক আকার নিচ্ছে। কারও ক্ষেত্রে আবার তেমন কোনও প্রভাবই ফেলছে না। কোভিডের ডেল্টা রূপের কারণে বহু মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আবার ডেল্টা সংক্রমণ অনেকে টেরই পাননি। এর কি কোনও ব্যাখ্যা আছে? কাদের কোভিড বেশি মাত্রায় ধরাশায়ী করবে, কাদের তেমন কোনও সমস্যাই হবে না— এর কোনও আভাস পাওয়া যেতে পারে কি? অবশ্যই পারে। তেমনই বলছে হালের গবেষণা। সেখানে দাবি করা হয়েছে, কোভিড সংক্রমণের ফলে কাদের মৃত্যুর আশঙ্কা বেশি, সেটিও আগে থেকে টের পাওয়া সম্ভব।
সম্প্রতি পোল্যান্ডের কয়েক জন বিজ্ঞানী এমনই একটি জিনের সন্ধান পেয়েছেন। এই জিনটি যাঁদের শরীরে রয়েছে, কোভিডের বাড়াবাড়ি এবং মৃত্যুর আশঙ্কা তাঁদের মধ্যে অন্যদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। পোল্যান্ডের স্বাস্থ্য দফতর মনে করছে, এই আবিষ্কার আগামী দিনে মানুষকে আরও বেশি করে সুরক্ষা দিতে পারবে। কাদের কোভিড থেকে ভয় আছে, তাঁদের চিহ্নিত করা সহজ হয়ে যাবে।
এখনও পর্যন্ত শুধুমাত্র পোল্যান্ডেই ১ লক্ষের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে কোভিডে। আগামী দিনে এই অসুখটি ঠিক কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে, তাও বলতে পারছেন না কেউ। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষের জিন পরীক্ষা করে সতর্ক করা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন সে দেশের বিজ্ঞানীরা।
কত মানুষের এমন জিন থাকতে পারে? গবেষকরা বলছেন, পোল্যান্ডের জনসংখ্যার প্রায় ১৪ শতাংশের এমন জিন রয়েছে। যদিও সমগ্র ইউরোপ মিলিয়ে সংখ্যাটি তার চেয়ে কম। ৯ শতাংশ মতো মানুষের এই জিন আছে বলে দাবি করা হয়েছে। ভারতে কত জনের এমন জিন রয়েছে, তারও উত্তর দেওয়া হয়েছে গবেষণাটিতে। বলা হয়েছে, ভারতীয়দের মধ্যে ২৭ শতাংশের এমন জিন আছে।
গবেষকদলের সদস্য মার্সিন মোনিউজকো বলেছেন, জিন পরীক্ষা করে বহু মানুষকে কোভিড থেকে বাঁচানো সম্ভব হবে এর পরে। কোভিড যাঁদের শরীরে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে, তাঁদের আগে থেকেই সতর্ক করা যাবে এই পরীক্ষার ফল দেখে।
কোভিডের কারণে ইউরোপে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে দেশগুলি, তাদের মধ্যে একেবারে প্রথম দিকে থাকবে পোল্যান্ডের নাম। তবে জিনই একমাত্র কারণ নয়, এ দেশে কোভিডের কারণে মৃত্যু ভয়াবহ হারের আরও এক কারণ টিকার প্রতি অনীহা। দেশের বড় সংখ্যক মানুষ টিকা নিতে চাননি। আর সেটিই বিপদের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছিল। এমনই বলছেন বিশেষজ্ঞরা।