বড় বড় শহর তো বটেই, শহরতলী বা গ্রামেও এখন যানবাহনের ব্যাপক সংখ্যা বেড়ে গেছে। যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ফলে বেড়েছে দূষণ। বায়ু দূষণের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে শব্দ দূষণও। তবে এই শব্দ দূষণ শুধুমাত্র কানের ক্ষেত্রে ক্ষতিকারক তা কিন্তু নয়। সম্প্রতি একটি গবেষণায় জানা গেছে, ট্রাফিকের শব্দ বৃদ্ধির ফলে হতে পারে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক অথবা ডায়াবেটিসের মত একাধিক রোগ।
গবেষণায় জানা গেছে, রাস্তার ট্রাফিক থেকে আসা শব্দের প্রতি ১০ ডেসিবেল বৃদ্ধি হওয়ার কারণে, বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বেড়েছে ৩.২%। বিশেষ করে যে সমস্ত ব্যক্তিদের রাস্তার পাশে বাড়ি, তাদের ঘুমের সময়কে ব্যাহত করে রাতের ট্রাফিকের শব্দ। ঘুম কম হওয়ার কারণে হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায় এবং মানসিক চাপ বাড়তে পারে।
জার্মানির ইউনিভার্সিটি মেডিকেল সেন্টার মেইঞ্জের সিনিয়র প্রফেসর থমাস মুঞ্জেল বলেন, ‘এই মুহূর্তে শুধুমাত্র হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মত সমস্যা নয়, ট্রাফিকের শব্দের কারণে বেড়েছে কার্ডিওভাসকুলার রোগের সমস্যাও।’
কীভাবে কমানো যাবে শব্দ দূষণ?
রাস্তা, রেল এবং বিমান ট্রাফিক থেকে শব্দ কমানোর জন্য স্থানীয় কর্তৃপক্ষদের কিছু নিয়ম মেনে চলার কথা জানিয়েছেন গবেষকরা। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় রাস্তা নির্মাণ করার সময় আওয়াজ হ্রাসকারী অ্যাসফল্ট ব্যবহার করে ৩ থেকে ৬ ডেসিবেল মাত্রা কমিয়ে আনা যেতে পারে।
ব্যস্ত রাস্তার পাশে শব্দ প্রতিবন্ধক স্থাপন করে উল্লেখযোগ্যভাবে ১০ ডেসিবেল পর্যন্ত শব্দের মাত্রা কমিয়ে আনা যাবে বলে মনে করেন গবেষকরা। এছাড়া ড্রাইভিং স্পিড কমিয়ে এবং কম শব্দের টায়ার ব্যবহার করেও শব্দ দূষণ রোধ করা যায়।
বিমানের শব্দ কমানোর জন্য, জিপিএস ব্যবহার করে বিমানের রুট অপটিমাইজ করা এবং পরিকল্পনা মাফিক কৌশল গ্রহণ করলেই কমে যাবে বিমান থেকে তৈরি হওয়া শব্দ দূষণ। রাতের সময় যে সমস্ত বিমান টেক অফ করে অথবা ল্যান্ডিং করে, তাদের জন্য বিশেষ কিছু নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলে বিমান ট্রাফিকের শব্দকে উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেওয়া যেতে পারে।
রেল ট্রাফিকের শব্দ কমানোর জন্য ব্রেক আপগ্রেড সহ বেশ কিছু নিয়মে পরিবর্তন আনলে রেল ট্রাফিকের শব্দ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। প্রসঙ্গত, মহামারীর সময় উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গিয়েছিল শব্দ দূষণ। কিন্তু মহামারীর পরে তা আরো একবার বেড়ে গেছে। শব্দ নিয়ন্ত্রণের জন্য তৈরি হওয়া আইনগুলি যদি মেনে চলা যায় তাহলে শব্দ দূষণ থেকে তৈরি কোনও শারীরিক সমস্যায় ভুগতে হবে না কাউকে।