ভয়াবহ পরিস্থিতি হরিয়ানায়। একটি ধর্মীয় মিছিলকে আটকানোর অভিযোগে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে হরিয়ানার নুহ্ এবং গুরুগ্রাম জেলায়। সেই হিংসার ঘটনায় দুই হোমগার্ড সহ অন্তত পাঁচজনের মৃত্যু ঘটেছে। এর মধ্যে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে নুহ্ জেলায়। মৃত হোমগার্ডদের নাম - নীরজ এবং গুরুসেবক। ঘটনায় জখম আরও অন্তত ২০০ জন। এই আবহে হিংসা নিয়ে মুখ খুললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর। এক টুইট বার্তায় খট্টর লেখেন, 'সোমবারের ঘটনাটি দুঃখজনক। রাজ্যে শান্তি বজায় রাখার জন্য আমি সকলের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। দোষীদের কোনও মূল্যেই ছাড় দেওয়া হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' এদিকে হিংসার আবহে আজ গুরুগ্রামের সমস্ত স্কুল এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা করা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, গতকাল গুরুগ্রামের কাছে নুহ্ জেলায় একটা ধর্মীয় মিছিল হচ্ছিল। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের উদ্যোগে ব্রিজ মণ্ডল জলাভিষেক যাত্রা শুরু হয়েছিল। তখনই গুরুগ্রাম আলওয়ার হাইওয়েতে এই যাত্রা থামান কয়েকজন। এরপরই মিছিলকে লক্ষ্য করে পাথর ছোঁড়া হয়। সরকারি ও বেসরকারি গাড়িকে লক্ষ্য পাথর ছোঁড়া হয়। সেই সময় পাশের এক শিবমন্দির চত্বরে আশ্রয় নেন প্রায় ২৫০০ মানুষ। সন্ধ্যার দিকে গুরুগ্রাম সোহনা হাইওয়েতে হিংসা ছড়াতে থাকে। একাধিক গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার জেরে বেশ কিছু বাড়িঘর, দোকানেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। ধর্মস্থানেও হামলা হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করেও চলে ইট বৃষ্টি।
অভিযোগ, বজরং দলের এক কর্মী একটি আপত্তিকর ভিডিয়ো পোস্ট করেছিলেন সোশ্য়াল মিডিয়ায়। তারপর থেকেই এনিয়ে শোরগোল ছড়িয়েছিল। ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে একাধিক ফৌজদারি মামলাও রয়েছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সেই মিছিলে সেই বজরং দল কর্মী থাকবেন বলে দাবি জানিয়েছিলেন। মনু এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় কার্যত খোলা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছিলেন। আর তারপরেই সেই মিছিল আটকানো হয়। মূলত এই বজরং দল কর্মীর জেরেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে। চলে গুলিও। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। তবে হিংসার জেরে দুই হোমগার্ডের মৃত্যু হয়েছে। এরপর থেকেই এলাকায় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আবেদন করেছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতারা। এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। গুজব এবং প্ররোচনা ঠেকাতে মোবাইল ও ইন্টারনেট পরিষেবা সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় রুট মার্চ করেছে সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী।