সত্যেন মহাপাত্র
স্বাধীনতা পেল ভারত। ইউনিয়ন জ্যাক (ব্রিটিশ পতাকা) নামিয়ে উত্তোলন করা হচ্ছে ভারতীয় পতাকা। প্রায় ২০০ বছরের ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অবসান ঘটিয়ে স্বাধীন ভারতে পতপত করে উড়ছে তেরঙা।
দীর্ঘদিন ধরে সেই পুরনো ফুটেজ দেখানো হলেও আদতে ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ইউনিয়ন জ্যাক নামানো হয়নি। এমনই দাবি করা হয়েছে বার্মার রিয়ার অ্যাডমিরাল ভিসকাউন্ট মাউন্টব্যাটেনের (ভারতের ভাইসরয় গভর্নর জেনারেল এবং ব্রিটিশ রাজত্বের প্রতিনিধি) 'টপ সিক্রেট অ্যান্ড পার্সোনাল রিপোর্টে' (১৭ নম্বর)। যে রিপোর্ট ১৯৪৭ সালের ১৬ অগস্টের ছিল। লন্ডনের ইন্ডিয়া অফিসে সেই রিপোর্ট আছে।
আরও পড়ুন: How was 15th August, 1947: ‘ভিড়ে হারিয়ে গেল ছাতা, আর হারিয়ে গেল দেশ’, মনোজ মিত্র
ওই রিপোর্টে ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্টের বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেছিলেন মাউন্টব্যাটন। তিনি লিখেছিলেন, 'নয়া ডোমিনিয়নের (ভারত) পতাকাকে সাদরে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য আসলে সন্ধ্যা ছ'টায় একটি দুর্দান্ত অনুষ্ঠান ছিল। আদতে তখন আনুষ্ঠানিকভাবে ইউনিয়ন জ্যাক নামানোর কথা ছিল। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে আমি যখন (জওহরলাল) নেহরুর সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন, উনি সম্পূর্ণভাবে রাজি হয়েছিলেন যে ওইদিনে তিনি সকলকে আনন্দিত দেখতে চেয়েছিলেন। যদি ইউনিয়ন জ্যাক নামানোর ফলে কোনওভাবে ব্রিটিশদের ভাবাবেগ ক্ষুণ্ণ হয়, তাহলে ইউনিয়ন জ্যাক কোনওভাবে নামানোর পক্ষপাতী নন বলে জানিয়েছিলেন তিনি (নেহরু)।'
কেমন ছিল ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট?
মাউন্টব্যাটেনের কথায়, ১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট তাঁর জীবনের সেরা এবং অনুপ্রেরণামূলক দিন ছিল। প্রায় ৫০০ জন সরকারি আমন্ত্রিতের উপস্থিতিতে সকাল ৮ টা ৩০ মিনিটে দুর্বার হলে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান শুরু হয়েছিল। তিনি বলেন, 'আমি যাঁদের সঙ্গে কথা বলেছিলাম, তাঁরা কোনওদিন এরকম জনতার স্রোত দেখেননি। তাঁরা শুধুমাত্র প্রতিটি ছাদ এবং প্রতিটি জায়গায় ছিলেন না, এত মানুষ ছিলেন যে কার্যত ভিড় সামলানো যাচ্ছিল না।' মাউন্টব্যাটেন দাবি করেছিলেন, 'জয় হিন্দ' এবং 'মহাত্মা গান্ধী কী জয়' স্লোগানের পাশাপাশি 'লেডি মাউন্টব্যাটেন কী জয়' এবং ‘পণ্ডিত মাউন্টব্যাটেন জয়’ স্লোগান উঠেছিল।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: মূল লেখাটি হিন্দুস্তান টাইমসে প্রকাশিত হয়েছিল। সেই লেখার একাংশ তুলে ধরা হল হিন্দুস্তান টাইমস বাংলার ‘স্বাধীনতার ৭৫’ সিরিজে।)