মহুয়া মৈত্রের সাংসদপদ খারিজের মামলায় লোকসভার সেক্রেটারি জেনারেলকে জবাব দিতে হবে। নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। সেজন্য নির্দিষ্ট সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। বুধবার মহুয়ার সাংসদপদ খারিজের মামলার সওয়াল-জবাবের পর শীর্ষ আদালত জানিয়েছে যে দু'সপ্তাহের মধ্যে সংসদের নিম্নকক্ষের সেক্রেটারি জেনারেলকে উত্তর দিতে হবে। সেইসঙ্গে আগামী ১১ মার্চ সেই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। যে দিনটা এগিয়ে এনে ফেব্রুয়ারিতে করার আর্জি জানান তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মহুয়ার আইনজীবী অভিষেক মনু সিংঘভি। তবে সেই আর্জি গৃহীত হয়নি। ১১ মার্চেই ফের মামলার শুনানি হবে। ততদিন পর্যন্ত অন্তবর্তীকালীন রেহাইয়ের যে আর্জি জানান মহুয়া, তাও মেলেনি। অর্থাৎ সাময়িকভাবে কোনও স্বস্তি পেলেন না মহুয়া।
বুধবার শীর্ষ আদালতে মহুয়ার আইনজীবী দাবি করেন, শুধুমাত্র সংসদের লগইন আইডি শেয়ার করার জন্য তৃণমূল নেত্রীকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। টাকা নিয়ে প্রশ্ন করার যে অভিযোগ উঠেছে, তাতে বলা হয়েছে যে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে হবে। মহুয়ার হয়ে তিনি বলেন, '(কাউকে) পাসওয়ার্ড দেওয়া নিয়ে কোনও নিয়ম না থাকলেও আমায় বহিষ্কৃত করা হয়েছে।' সঙ্গে মহুয়া দাবি করেন, 'একজন সাংসদের অভিযোগের ভিত্তিতে এটা করা হয়েছে। একাধিক অসঙ্গতি থাকলেও আমায় পালটা প্রশ্ন করতে দেওয়া হয়নি।'
তারইমধ্যে মহুয়ার আইনজীবী স্বীকার করে নেন যে সংসদের লগইন আইডি শেয়ার করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। যে কথা আগেও জনসমক্ষে স্বীকার করেছিলেন মহুয়া। সেই প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ মন্তব্য করে, ‘তাহলে আপনি স্বীকার করছেন যে মিস্টার হিরানন্দানিকে ওটিপি দেওয়া হয়েছিল। আপনি স্বীকার করছেন?’ সেটার প্রত্যুত্তরে মহুয়ার আইনজীবী বলেন, ‘হ্যাঁ। যেরকম অনেক সাংসদই নিজেদের প্রতিনিধিদের ক্ষেত্রে করে থাকেন।’
মহুয়ার আইনজীবী আরও দাবি করেন যে তাঁকে বহিষ্কারের আগে গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষীদের তলব করা হয়নি। তাঁকে যে বহিষ্কার করা হয়েছে, সেই প্রক্রিয়ায় প্রচুর অসঙ্গতি ছিল। সেইসঙ্গে মহুয়া দাবি করেন, ‘অসঙ্গতিতে পরিপূর্ণ একটি চিঠির মাধ্যমে জয় অনন্ত দেহদ্রাই এই বিষয়টি চেপে যাওয়ার চেষ্টা করেন যে আমি তাঁর সঙ্গে সম্পর্কে ছিলাম।’ সবমিলিয়ে বুধবার সুপ্রিম কোর্টে মহুয়া দাবি করেন, যে যুক্তিতে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়েছে, সেটা একেবারেই ভিত্তিহীন।
তাতে অবশ্য কোনও স্বস্তি পাননি মহুয়া। গত ৮ ডিসেম্বর যাঁর সাংসদপদ খারিজ হয়ে যায়। হিরানন্দানি গ্রুপের থেকে টাকা নিয়ে আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে সংসদে প্রশ্ন করা এবং নিজের আইডি-পাসওয়ার্ড শেয়ার করার অভিযোগে লোকসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে মহুয়া সাংসদপদ খারিজ হয়ে গিয়েছে। তাঁকে বহিষ্কারের সুপারিশ করেছিল এথিক্স কমিটি। তারপর ধ্বনিভোটে মহুয়ার সাংসদপদ খারিজ হয়ে যায়। সেই মামলায় আপাতত শুধুমাত্র লোকসভার সেক্রেটারি জেনারেলের জবাব চেয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।