হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের সুরেই সুর বেঁধে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল 'অর্গানাইজন ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রোজেক্ট'। তাতে দাবি করা হয়েছে, অস্বচ্ছ ভাবে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে বিনিয়োগ করেছেন গৌতম আদানি ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরাই। এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে এবার পালটা আক্রমণ শানাল আদানি।
1/7 'অর্গানাইজন ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রোজেক্ট' যে জর্জ সোরোসের থেকে অর্থ সাহায্য পায়, সেই বিষয়টি তুলে ধরে আদানি গোষ্ঠী দাবি করেন, একই অভিযোগ নয়া রূপে পরিবেশন করেছে ওসিসিআরপি। ডিরেক্টোরেট অফ রেভিনিউ ইন্টেলিজেন্স এই সব অভিযোগ এক দশক আগে খতিয়ে দেখে তাদের ছাড় দিয়েছে বলেও জানায় আদানি। সেই অভিযোগ থেকেই নতুন করে এই সব রিপোর্ট পেশ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ আদানি গোষ্ঠীর। তাদের তরফে বলা হয়েছে, ওসিসিআরপি-র রিপোর্টে মরিশাসের যে ফান্ডের কথা বলা হচ্ছে, সেটা হিন্ডেনবার্গের রিপোর্টেও ছিল। এবং এই গোটা অভিযোগই ভিত্তিহীন।
2/7 উল্লেখ্য, বিগত কয়েক বছরে বহুবারই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন মার্কিন ধনকুবের জর্জ সোরোস। এই আবহে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট প্রকাশের পর সোরোস মিউনিখে এক অনুষ্ঠানে বলেছিলেন, 'আদানি কাণ্ডের ফলে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের উপর মোদীর প্রভাব উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে। ভারতের গণতন্ত্রে একটি নবজাগরণের সূচনা হবে।'
3/7 সোরোস আরও বলেছিলেন, 'আদানি এন্টারপ্রাইজ স্টক মার্কেট থেকে ফান্ড জোগাড়় করতে চাইছে। কিন্ত তারা ব্যর্থ হয়েছেন। আদানি স্টকে নানা কারচুপি করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তাসের ঘরের মতো সেই স্টক হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়েছে। মোদী গোটা বিষয়টিতে নীরব ছিলেন। তবে তাঁকে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সামনে ও সংসদে জবাব দিতে হবে।'
4/7 প্রসঙ্গত, জর্জ সোরোস একজন হাঙ্গেরিয়ান-আমেরিকান ব্যবসায়ী এবং সমাজসেবী। সোরোসের ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন বলে একটি সংস্থা আছে। তারা একাধিক দেশে ক্ষমতা বদলের ভূমিকাও নেয়। একাধিক রাজনৈতিক, লিগাল এনজিও, সিভিল রাইটস গ্রুপকে তারা নানা ভাবে সহায়তা করে বলেও খবর। সম্প্রতি আদানিকে নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশ করা ওসিসিআরপি সোরোসের সংস্থার টাকাতেই চলে বলে দাবি করেছে আদানি গোষ্ঠী।
5/7 'অর্গানাইজন ক্রাইম অ্যান্ড করাপশন রিপোর্টিং প্রোজেক্ট' তাদের এক প্রতিবেদনে অভিযোগ করে, আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে কয়েক মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছিল মরিশাসের অস্বচ্ছ একটি ফান্ড থেকে। সেই ফান্ডের সঙ্গে যুক্ত ছিল আদানি পরিবারের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ব্যবসায়ী অংশীদাররাই। এর আগে হিন্ডেনবার্গও এই ধরনেরই অভিযোগ করেছিল আদানিদের বিরুদ্ধে। তবে সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছিল আদানি। তাদের অভিযোগ, অন্তত দু'টি ক্ষেত্রে বিদেশ থেকে অস্বচ্ছ ভাবে আদানি গোষ্ঠীর শেয়ার কেনাবেচা করা হয়েছে।
6/7 প্রসঙ্গত, এর আগে আদানি গোষ্ঠীকে নিয়ে হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের রিপোর্ট প্রকাশের পরই তুলকালাম কাণ্ড হয়েছিল দেশের বাণিজ্য মহলে। ধস নেমেছিল আদানি গোষ্ঠীর শেয়ারে। হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসার পর আদানির শেয়ার ও ধন সম্পত্তির পরিমাণের গ্রাফ জানুয়ারি থেকে নিম্নমুখী হতে শুরু করেছিল। রিপোর্ট প্রকাশের পর ৪ মাসে আদানি গ্রুপের চেয়ারপারসন ৬০.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হারিয়েছেন।
7/7 এই পরিস্থিতিতে আদানিদের মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। এই আবহে সুপ্রিম কোর্ট এই বিষয়ে খতিয়ে দেখতে একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে দিয়েছিল। সেই কমিটির প্রাথমিক রিপোর্টও জমা পড়েছে। সুপ্রিম কোর্টের গঠিত কমিটির রিপোর্টে বলা হয়, 'এখনও পর্যন্ত আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে শেয়ারের দাম হেরফের করার কোনও প্রমাণ মেলেনি। এছাড়া একটি নির্দিষ্ট কোনও পার্টির মাধ্যমে একাধিকবার ভুয়ো ট্রেডিং বা ওয়াশ ট্রেডের কোনও প্যাটার্ন পাওয়া যায়নি। ব্যবসায় জালিয়াতিরও কোনও সুসংগত প্যাটার্ন প্রকাশ্যে আসেনি।'