শুভব্রত মুখার্জি: এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে বিশ্ব ক্রিকেটে সবথেকে আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে খেলা দলটির নাম নিঃসন্দেহে ইংল্যান্ড। দলের হেড কোচ হিসেবে প্রাক্তন কিউয়ি তারকা ব্রেন্ডন ম্যাককালাম এবং অধিনায়ক হিসেবে বেন স্টোকস দায়িত্ব নেওয়ার পরেই বদলে যায় ইংল্যান্ডের টেস্ট দলের ভাগ্য। টি-২০ ক্রিকেটের ভঙ্গিমায় কার্যত টেস্ট খেলা শুরু করেছেন স্টোকস অ্যান্ড কোম্পানি। বিশ্ব ক্রিকেট এই নয়া আক্রমণাত্মক খেলার ধরনকে আখ্যা দেয় 'ব্যাজবল' হিসেবে।
নতুন ধরনের এই ক্রিকেটে খেলে ইংল্যান্ডের সাফল্যের হার ঈর্ষণীয়। বর্তমানে ইংল্যান্ড দল রয়েছে পাকিস্তান সফরে। সেখানে ইতিমধ্যেই তাঁরা রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টেস্টে জিতে সিরিজে এগিয়ে রয়েছে। মুলতানে দ্বিতীয় টেস্টে খেলতে নামার আগে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকসের গলাতে ফের শোনা গেল সেই আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলার কথা। টেস্টে ড্র নয়, বরং জেতার জন্য তিনি কতদূর পর্যন্ত যেতে পারেন তার একটা ধারণা দিয়ে রাখলেন।
আরও পড়ুন… ব্রাজিলের সাংবাদিক সম্মেলনে হঠাৎ ঢুকে পড়ল বিড়াল! কী হল তারপর?
মুলতান টেস্টের আগে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েছিলেন বেন স্টোকস। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল দিনের শেষ ওভারের খেলা চলছে। ৯ উইকেট পড়ে গিয়েছে। জয়ের জন্য ২০ রান বাকি। স্ট্রাইকে রয়েছেন জেমস অ্যান্ডারসন। তাহলে কি ইংল্যান্ড জয়ের জন্য ঝাঁপাবে? স্টোকসের স্পষ্ট উত্তর 'অবশ্যই'। ফের তাঁকে প্রশ্ন করা হয় তাহলে যে কোন পরিস্থিতিতে ড্র একেবারেই ভালো ফল নয়? উত্তরে স্টোকসের স্পষ্ট বক্তব্য, ‘আমাকে কি এর উত্তরটা আবার দিতে হবে? (আগেই তো বলে দিয়েছি ড্র নয় জয়ের জন্য ঝাঁপাব)।’ উল্লেখ্য এই সাংবাদিক সম্মেলনেই টেস্টে ফলাফল বের করতে একটা গোটা দিন ব্যাট না করেও ম্যাচ জমাতে যে তিনি ডিক্লেয়ার করতে পিছপা হবেন না তা জানিয়ে দিয়েছিলেন স্টোকস।
বেন স্টোকসের অধিনায়কত্বে এখন পর্যন্ত ৮টি টেস্ট খেলে সাতটিতেই জয় পেয়েছে ইংল্যান্ড। যার মধ্যে আবার পাঁচটি ম্যাচে রয়েছে রুদ্ধশ্বাস রান তাড়া করে জয়। নিজের অধিনায়কত্বের বিষয়ে বলতে গিয়ে স্টোকস জানান, ‘আমি যখন থেকে দায়িত্ব (অধিনায়কত্বের) পেয়েছি তখন থেকেই এমনভাবে এগোবো ভাবনাটা তেমন ছিল না একেবারেই। জো (রুট) যখন দায়িত্বে ছিল তখন গোটা দলটা জো'র ছিল। প্রতি মিনিটে আমি ওঁর (রুটের) পাশে দাঁড়িয়েছি। তবে আমি যখন ইংল্যান্ডের নেতৃত্বের দায়িত্বভার পেয়েছি আমি এমনভাবে কাজটা করতে চেয়েছি যাতে করে দলের ভালো হয়। ছেলেরা সবাই সেই কাজটা করতে আমার ডাকে সারা দিয়েছে। দলের ছেলেরা সেই কাজটা ভালো ভাবে করেছে।’
আরও পড়ুন… 'হ্যারিস বারবার বলছিল, ফিরে এস', বিশ্বকাপ ফাইনালের চোট নিয়ে মুখ খুললেন শাহিন
তিনি আরও যোগ করে বলেন, ‘টেস্ট ক্রিকেট যেন দীর্ঘদিন ধরে একটা জায়গায় আটকে ছিল। কী ভাবে এই ফর্ম্যাটে খেলাটা হবে তা সেই গতানুগতিক নিয়ম মেনেই চলছিল।মাঠের ভিতরে হোক কিংবা বাইরে প্রস্তুতি কেমন করে নিচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে আপনি মাঠে কেমন পারফরম্যান্স করছেন। প্রত্যেকেই প্রচুর ক্রিকেট খেলেছেন। তাঁদের আলাদা করে দায়িত্ব দিয়েই আমরা সঠিক কাজটা করতে পেরেছি।’
তাঁর মতে, ‘এমন দিন আসতেই পারে যেখানে দাঁড়িয়ে ম্যাচে রেজাল্ট বার করে আনাটা কার্যত সম্ভব হবে না। ধরুন চারদিন ধরে বৃষ্টি হল। সেক্ষেত্রে এক বা দুই দিনে ম্যাচের রেজাল্ট বের করাটা কঠিন কাজ। এই পরিস্থিতিতে আমি সবসময় পরিকল্পনা করব। ব্যাজের (ব্রেন্ডন ম্যাককালাম) আলোচনা কী ভাবে ম্যাচ থেকে রেজাল্ট বের করে আনা যায়। বিশেষ করে ইংল্যান্ডে, ওখানকার পরিবেশে এমন পরিস্থিতি আসতেই পারে। কে বলতে পারে তখন আমি হয়ত একদিন ব্যাট না করেই ডিক্লেয়ার দিয়ে দিতে পারি। টেস্টের ক্ষেত্রে আমাদের পরিকল্পনায়, ভাবনায় চিন্তায় আরও বেশি করে সাহসী হতে হবে তবেই সাফল্য আসবে।’
পাকিস্তান সিরিজ নিয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনি দেখবেন যখন উপমহাদেশের ক্রিকেট নিয়ে কথা হয় তখন সবাই স্পিন নিয়েই বেশি কথা বলে। তবে প্রথম টেস্ট (রাওয়ালপিন্ডি) যত এগিয়েছে,পঞ্চম দিনে খেলা যতটা গভীরে গেছে তত আমরা দেখেছি সিম বোলিং কী ভাবে খেলাকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। রিভার্স সুইং বড় বিপদ হয়ে দেখা দিয়েছে ব্যাটারদের সামনে। যদি প্রথম ইনিংসে আমাদের বোলিং অ্যাটাককে দেখা যায় তাহলে দেখবেন সবদিকটা আমাদের কভার করা ছিল। আমাদের কাছে তিন জন ভালো পেসার ছিল। পাশাপাশি তিনটে স্পিন বোলিংয়েরও অপশন ছিল। আপনারা নিশ্চয় দেখেছেন বাবর (আজম) বলেছে ও আশা করেছিল রাওয়ালপিন্ডিতে পিচে বল স্পিন করবে। তবে বল স্পিন করেনি। আমাদের পরিকল্পনা কাজ করে গিয়েছে।'
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।