পঞ্চায়েত নির্বাচন মিটেও মিটছে না। কারণ এই নির্বাচন নিয়ে মামলা চলছে কলকাতা হাইকোর্টে। আদালতের রায়ের উপরই নির্ভর করছে জয়ী প্রার্থীদের ভবিষ্যৎ। কিন্তু পঞ্চায়েতের তিন স্তরেই বোর্ড গঠন করার ক্ষেত্রে কোনও বাধা নেই। তাই এই নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তবে বিচারাধীন বিষয়টির উল্লেখ রেখেই বিজ্ঞপ্তি জারির চিন্তাভাবনা করছে নবান্ন বলে সূত্রের খবর। তবে আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হতে পারে। আর সেটা হলে নবনির্বাচিত সদস্যদের প্রথম বৈঠক ডেকে বোর্ড গঠন করতে বলা হবে। এই বিজ্ঞপ্তির একটা খসড়া তৈরি করে ফেলেছে পঞ্চায়েত দফতর বলে খবর। তবে তাতে সবুজ সংকেত মেলেনি।
এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে হওয়া মামলার শুনানি হওয়ার কথা ২০ জুলাই। তাই দোলাচল তৈরি হয়েছে পুরো বিষয়টি নিয়ে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন সূত্রে খবর, পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করার কথা জেলা প্রশাসনগুলির। তারা তালিকা তৈরি করে পাঠাবে পঞ্চায়েত দফতরে। তারপর গেজেট বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হবে। ইতিমধ্যেই জয়ী প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা পঞ্চায়েত দফতরে জমা পড়েছে। কিন্তু সব পড়েনি। তাই পঞ্চায়েত দফতর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারছে না। চলতি মাসে এই বিজ্ঞপ্তি জারি না হলে প্রশাসক নিযুক্ত করতে হবে অনেক জায়গায়। কারণ পাঁচ বছরের মধ্যে নতুন বোর্ড না এলে প্রশাসক বসানো বাধ্যতামূলক। সুতরাং পাঁচ বছর আগে বোর্ড গঠন হয়েছিল। এবার পাঁচ বছর শেষ হতে চলেছে।
অন্যদিকে নির্বাচন শেষ হওয়ার কতদিনের মধ্যে বোর্ড গঠনের বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হবে সেটা নির্দিষ্ট করে পঞ্চায়েত আইনে বলা নেই। তবে যত দ্রুত সম্ভব বোর্ড গঠন করে ফেলার কথা উল্লেখ রয়েছে। বিডিও–দের নিয়ে নানা অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী থেকে অধীর চৌধুরীরা। বিডিও নিয়ে এমন সব অভিযোগে অস্বস্তি পড়েছে রাজ্য সরকারের অফিসাররা। কারণ স্থানীয় নির্বাচনের সময় পুলিশ এবং সাধারণ প্রশাসন রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অধীনে থাকে। তাহলে এত অভিযোগ উঠছে কেন? এই প্রশ্ন এখন দেখা দিয়েছে।
আরও পড়ুন: বাংলার ১১টি জেলাকে ‘ভূমি সম্মান’ দিলেন রাষ্ট্রপতি, ব্যথা বাড়ল বঙ্গ–বিজেপির
ঠিক কে, কি বলেছেন? পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং তার ফলাফলের পর বিডিওদের নিশানা করা হয়েছে। কালো গোলাপ ফুল এবং মিষ্টি দিয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ, ‘বিডিও’রা ভোট লুট করিয়েছেন। ওরা টাকা–পয়সা দিয়ে নিয়োগ হয়েছেন। এই জালিয়াতি বিডিও’রা শাসকদলের হয়ে করেছে। ভোট লুট এবং গণনায় ডাকাতি হয়েছে।’ অধীর চৌধুরীর কথায়, ‘নানা জায়গায় বিডিও, আইসিদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল বিরোধীদের হারাতে।’ আর তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ পাল্টা বলেন, ‘বিডিওদের নিয়ে ভিত্তিহীন অভিযোগ করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রাপ্য রাজ্যের টাকা আটকে, কেন্দ্রীয় বাহিনীর ভয় দেখিয়েও মানুষের সমর্থন ঠেকানো যায়নি। তাই হতাশা থেকে এসব বলছেন।’