সন্দেশখালির অরাজনৈতিক গণআন্দোলনে এখন পুরোপুরি রাজনীতির বোড়ে। প্রতিবাদী রেখা পাত্রকে প্রার্থী করে সন্দেশখালিকে লোকসভা ভোটের ইস্যু করে তুলেছে বিজেপি। একই পথে হেঁটে সেখানকার প্রাক্তন বিধায়ককে প্রার্থী করেছে সিপিআইএম। রাজনীতির এই দড়ি টানাটানির মধ্যে সন্দেশখালিতে তৃণমূলে যোগদান করলেন প্রতিবাদীদের একাংশ। শনিবার মন্ত্রী সুজিত বসুর উপস্থিতিতে তৃণমূলের পতাকা হাতে নেন তাঁরা।
শনিবার সন্দেশখালির পাত্রপাড়ায় বসিরহাটের তৃণমূল প্রার্থী হাজি নুরুলের সমর্থনে একটি পথসভার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই সভায় তৃণমূলে যোগদান করেন পাত্রপাড়ার বেশ কয়েকজন প্রতিবাদী মহিলা। তবে ওই সভায় ছিলেন না প্রার্থী নিজে।
কী বলছেন তৃণমূলে যোগদানাকরী প্রতিবাদীরা
তৃণমূলে যোগদান নিয়ে এক মহিলা বলেন, ‘আমাদের অরাজনৈতিক আন্দোলনে BJP রাজনীতির অনুপ্রবেশ ঘটিয়েছে। আমরা ভেবেছিলাম সবাই একজোট হয়ে থাকব। কিন্তু বিজেপি রেখা পাত্রকে প্রার্থী করে তাদের মতলব বুঝিয়ে দিয়েছে। এতে আমাদের আন্দোলন রসাতলে গেছে। তাই আমরাও এবার তৃণমূলে যোগদান করলাম।’
আস্থা ফিরছে তৃণমূলে, দাবি মন্ত্রীর
মন্ত্রী সুজিত বসু বলেন, ‘সন্দেশখালিতে কিছু ঘটনা তো ঘটেছে। তাতে অভিযুক্তদের গ্রেফতারও করেছে রাজ্য পুলিশ। এখানে যে অন্যায় হয়েছিল দিদি তার প্রতিকার করেছেন। জোর করে দখল করা জমি ফিরিয়ে দিয়েছেন। জানিয়ে দিয়েছেন, আদিবাসীদের জমি দখল করা চলবে না। এর পর তৃণমূলের ওপরে মানুষের আস্থা ফিরেছে। ভুল বোঝাবুঝি মিটে গেছে।’
সন্দেশখালির সমীকরণ
লোকসভা নির্বাচনে সন্দেশখালিতে মহিলাদের ওপর তৃণমূল নেতাদের অত্যাচার ও জমি দখলকে অন্যতম ইস্যু করে তুলেছে বিরোধীরা। গণ আন্দোলনের জেরে সেখানে একে একে জেলে গিয়েছে দোর্দণ্ডপ্রতাপ সব তৃণমূলি মাফিয়ারা। সেখানকার তৃণমূলি গুন্ডা শেখ শাহজাহান বর্তমানে ইডির হেফাজতে। ওদিকে বসিরহাটকে এবার প্রেস্টিজ ফাইট হিসাবে গ্রহণ করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সন্দেশখালির প্রতিটি মানুষ যাতে ১২ বছর পর ভোট দিতে পারে তা নিশ্চিত করবেন বলে কথা দিয়েছেন তিনি।
ওদিকে এলাকার প্রাক্তন বিধায়ক তথা কৃষক সভার নেতা নিরাপদ সরদারকে বসিরহাটে প্রার্থী করেছে CPIM. CPI এর কাছ থেকে আসনটি নিয়ে সেই আসনে নিরাপদবাবুকে দাঁড় করিয়েছে তারা। সন্দেশখালিতে ইডির ওপর হামলার পর শেখ শাহজাহান ফেরার হতেই সংবাদমাধ্যমকে তার গতিবিধি সম্পর্কে লাগাতার আপডেট দিচ্ছিলেন নিরাপদবাবু। এর পর তাঁকে সন্দেশখালিতে হিংসা ছড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার করে রাজ্য পুলিশ। সেই নিরাপদ সরদারই এবার বসিরহাটে বামেদের প্রার্থী। এই পরিস্থিতিতে বসিরহাটে তৃণমূলের জয় যে সহজ হবে না তা স্পষ্ট।