আদালতে জোরদার ধাক্কা খেলেও অধিকাংশ ইউরোপিয়ান ক্লাব এবং লিগকে পাশে পেল উয়েফা এবং ফিফা। ইউরোপিয়ান সুপার লিগ চালুর ক্ষেত্রে বাধাপ্রদান করে উয়েফা এবং ফিফা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আইন লঙ্ঘন করেছে বলে 'ইউরোপিয়ান কোর্ট অফ জাস্টিস' রায় দিলেও আদালতের বাইরে জোরদার সমর্থন পেয়েছে দুই সংস্থা। অন্যদিকে, আদালতের রায়ে বড় জয় হলেও ইউরোপে কার্যত একঘরে হয়ে পড়েছে রিয়াল মাদ্রিদ এবং বার্সেলোনা। এমনকী ২০২১ সালে ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, বার্য়ান মিউনিখ-সহ যে দলগুলি 'বিদ্রোহ' ঘোষণা করেছিল, সেই দলগুলিকেও পাশে পায়নি দুই স্প্যানিশ ক্লাব। বরং আদালতের রায়ের পরে একাধিক ক্লাবের তরফে উয়েফার প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছে ইংল্যান্ড, জার্মানির ক্লাব দলগুলি। যা নিশ্চিতভাবে আত্মবিশ্বাস বাড়িয়েছে উয়েফার। আর সেই আত্মবিশ্বাসে ভর করেই মাদ্রিদ ও বার্সেলোনাকে খোঁচা দিয়ে উয়েফার প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার সেফেরিন বলেন, দুটি ক্লাব নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব ইউরোপিয়ান সুপার লিগ শুরু করা হবে বলে আশা করছেন।
চরম কটাক্ষের সুরে বৃহস্পতিবার উয়েফার প্রেসিডেন্ট সেফেরিন বলেন, ‘আমরা ওদের আটকানোর চেষ্টা করব না। আমি আশা করছি যে দুটি ক্লাব নিয়ে ওরা যত দ্রুত সম্ভব নিজেদের দুর্দান্ত প্রতিযোগিতা চালু করবে।’ যে দুটি ক্লাবকে কটাক্ষ করেছেন উয়েফার প্রেসিডেন্ট, সেই দুটি ক্লাব হল দুই স্প্যানিশ জায়ান্ট রিয়াল মাদ্রিদ এবং বার্সেলোনা। যে দুটি ক্লাব এখনও ইউরোপিয়ান সুপার লিগের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত আছে।
উল্লেখ্য, যে ইউরোপিয়ান সুপার লিগ নিয়ে এত বিতর্ক হচ্ছে, সেটার সূত্রপাত হয়েছিল ২০২১ সালের এপ্রিলে। সেইসময় ইউরোপের অন্যতম ১২টি বড় ক্লাবের তরফে জানানো হয়েছিল যে প্রস্তাবিত ইউরোপিয়ান সুপার লিগের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছে তারা। যা নিয়ে সমর্থকদের তুমুল রোষের মুখে পড়েছিল একাধিক ক্লাব। চুপ করে বসে ছিল না উয়েফাও। ক্লাবগুলিকে হুঁশিয়ারি দেওয়ার পাশাপাশি যে খেলোয়াড়রা ইউরোপিয়ান সুপার লিগে খেলবেন, তাঁদের বিশ্বকাপের মতো টুর্নামেন্টে খেলতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দিয়েছিল।
কিন্তু ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ১২টি বিদ্রোহী ক্লাবের মধ্যে ন'টি ক্লাবই রিয়াল মাদ্রিদের প্রেসিডেন্ট ফোরেন্তিনো পেরেজের মস্তিষ্কপ্রসূত ইউরোপিয়ান সুপার লিগের সঙ্গ ছেড়ে দিয়েছিল। যে তালিকায় প্রিমিয়র লিগেরই শুধু ছ'টি দল (ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড, ম্যাঞ্চেস্টার সিটি, লিভারপুল, আর্সেনাল, চেলসি এবং টটেনহ্যাম হটস্পার) ছিল। পরবর্তীতে সঙ্গ এড়াতে থাকে বার্য়ানও। সেই পরিস্থিতিতে স্প্যানিশ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল সুপার লিগের হোতা এ২২ স্পোর্টস ম্যানেজমেন্ট। যে মামলাটি 'ইউরোপিয়ান কোর্ট অফ জাস্টিস'-এ পাঠানো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার সেই মামলার রায়দান করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: FIFA World Cup 2034: ২০৩৪-র বিশ্বকাপের কয়েকটি ম্যাচ আয়োজন করতে চাইছে AIFF, রাজি হবে সৌদি?
'ইউরোপিয়ান কোর্ট অফ জাস্টিস'-র রায়ে জানানো হয়, সুপার লিগের মতো ক্লাব প্রতিযোগিতা খেলা হলে সেই ক্লাবগুলির বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং খেলোয়াড়দের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হবে যে নিয়ম জারি করেছিল উয়েফা এবং ফিফা, তা সম্পূর্ণ বেআইনি। আদতে এরকম লিগ যাতে 'স্বচ্ছ, উদ্দেশ্যমূলক, বৈষম্যহীন এবং সমানুপাতিক' হয়, তা নিশ্চিত করা হল ফিফা এবং উয়েফার কাজ। কিন্তু সেটা না করে নিজেদের যে আধিপত্য আছে, সেটার অপব্যবহার করেছে ফিফা এবং উয়েফা। যে উয়েফা ইউরোপিয়ান সুপার লিগের বিষয়টি সামনে আসার পর চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফর্ম্যাটে কিছুটা পরিবর্তন করেছে।
রোহিতদের প্রস্তুতির রোজনামচা, পাল্লা ভারি কোন দলের, ক্রিকেট বিশ্বকাপের বিস্তারিত কভারেজ, সঙ্গে প্রতিটি ম্যাচের লাইভ স্কোরকার্ড । দুই প্রধানের টাটকা খবর, ছেত্রীরা কী করল, মেসি থেকে মোরিনহো, ফুটবলের সব আপডেট পড়ুন এখানে।