মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে অগ্নিমিত্রা পালকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। আর টিকিট পেয়েই সোমবার রাতে শান্তিকুঞ্জে পা রাখলেন অগ্নিমিত্রা। কাঁথির শান্তিকুঞ্জে গিয়ে বর্ষীয়ান নেতা শিশির অধিকারীর সঙ্গে দেখা করলেন অগ্নিমিত্রা পাল। কথা হয় বেশ কিছুক্ষণ। শান্তিকুঞ্জে পা রাখতেই অগ্নিমিত্রাকে ফুলের তোড়া, শাড়ি উপহার দিলেন শিশিরবাবু। বিজেপিতে সদ্য যোগ দেওয়া দিব্যেন্দু অধিকারীকে দেখা গেল অগ্নিমিত্রা পালকে নিয়ে বাড়িতে ঢুকলেন। নির্বাচনী পর্বে শিশির অধিকারী তাঁকে সবরকম সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান অগ্নিমিত্রা। বর্ষীয়ান বিদায়ী সাংসদ শিশির অধিকারীর পা ছুঁয়ে আশীর্বাদ নেন মেদিনীপুরের বিজেপি প্রার্থী। আর তারপরই তৃণমূল কংগ্রেসের খোঁচা, বিজেপি প্রার্থী হওয়ার পিছনে কার হাত রয়েছে সেটা এই ঘটনায় স্পষ্ট।
বিজেপির অন্দরের খবর, এবার লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় যে প্রার্থী দিয়েছে গেরুয়া শিবির তার পিছনে নাকি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর হাত রয়েছে। আর তাই অগ্নিমিত্রা টিকিট পেয়েই আনুগত্য দেখাতে শান্তিকুঞ্জে হাজির হন। আসলে মেদিনীপুর থেকে দিলীপ ঘোষকে সাইড করার পিছনে যাঁরা একজোট হয়েছেন তাঁরাই অগ্নিমিত্রা পালকে টিকিট দিয়েছেন। এমনটাই দাবি তৃণমূল কংগ্রেসের। দিলীপ ঘোষকে এবার বর্ধমান–দুর্গাপুর কেন্দ্র থেকে প্রার্থী করেছে বিজেপি। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের কীর্তি আজাদ। যদিও এমন কোনও দ্বন্দ্ব নেই বলে দাবি করেছেন মেদিনীপুর বিজেপি প্রার্থী।
আরও পড়ুন: লোকসভা নির্বাচনে কালো টাকা রুখতে উদ্যোগ, অ্যাপের মাধ্যমে ব্যাঙ্কে নজরদারি নির্বাচন কমিশনের
এদিকে আসানসোল থেকে উপনির্বাচনে প্রার্থী হয়ে হেরেছিলেন অগ্নিমিত্রা। তাই এবার তাঁকে মেদিনীপুরে নিয়ে আসা হয়েছে। যাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেসের জুন মালিয়া। মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে যে সাতটি বিধানসভা রয়েছে তার মধ্যে শুধুমাত্র এগরা পূর্ব মেদিনীপুরে পড়ে। বাকি ৬টি কেন্দ্রই পশ্চিম মেদিনীপুরে। তাই প্রার্থী হওয়ার পরেই অগ্নিমিত্রা পশ্চিম মেদিনীপুরের বদলে শান্তিকুঞ্জে যাওয়াকে বিজেপির মধ্যেকার দ্বন্দ্বের ফসল হিসেবেই দেখছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কুণাল ঘোষ বলেন, ‘যাঁরা দিলীপদাকে ষড়যন্ত্র করে মেদিনীপুর কেন্দ্র থেকে সরিয়ে দিয়েছেন সোমবার তাঁরাই একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। মেদিনীপুরে যাঁরা বিজেপির পুরনো কর্মী তারা এবার ঢেলে সমর্থন করবেন তৃণমূল কংগ্রেসকে।’
অন্যদিকে এই দ্বন্দ্বের কথা মানতে চাননি অগ্নিমিত্রা পাল। মেদিনীপুরের বিজেপি প্রার্থীর পাল্টা বক্তব্য, ‘পাঁচ বছর ধরে তিলে তিলে মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রের মানুষের স্বার্থে কাজ এবং নিবিড় সম্পর্ক ছিল সাংসদ দিলীপ ঘোষের। দিলীপ ঘোষের হাত ধরে রাজনীতিতে পা রাখি। আমি দিলীপ দাকে শ্রদ্ধা এবং সম্মান করি। তাঁর পরিশ্রমের জায়গা তিনি আমাকে ছেড়ে গিয়েছেন। তৃণমূল এটা প্রচার করার চেষ্টা করছে। আমি দিলীপদার যতটা অগ্নিমিত্রা, ততটাই শুভেন্দুদা এবং সুকান্তদার অগ্নিমিত্রা। তৃণমূল আমাদের কথা না ভেবে নিজেদের চিন্তা করুক। মেদিনীপুর লোকসভা কেন্দ্রে জুন মালিয়া কোনও ফ্যাক্টর নন। আমার লড়াইটা তৃণমূলের সঙ্গে।’